পলিটিক্সনিউজরাজ্য

আগামী ছয় মাসে আসবে নতুন তৃণমূল, অভিষেকের ছবি দিয়ে শহরে পড়লো হোর্ডিং

কোন দলীয় ঘোষণা নয় কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি এবং উক্তি সম্বলিত এই হোর্ডিং বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপক হিসেবে উঠে এসেছে বৈকি

×
Advertisement

স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির কলকাতায় নতুন সূর্যোদয়। হাজরা রাবিহারী এলাকায় অন্য নতুন পোস্টার। আগামী ছয় মাসের মধ্যেই সামনে আসবে নতুন তৃণমূল, জানানো হলো সেই তৃণমূল হবে, ‘ঠিক যেমন সাধারণ মানুষ চায়’। কোন দলীয় ঘোষণা নয়, বরং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর ছবি সহ বড় বড় হোর্ডিং এর এই লেখা ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায়। প্রচারের দায়িত্ব স্বীকার করেছে আশ্রিতা এবং কলরব নামে দুটি সামাজিক সংগঠন। এই দুটি সংগঠনের সভাপতি কালীঘাট রাসবিহারী অঞ্চলের তৃণমূল নেতা কুমার সাহা। স্বাভাবিক কারণেই রাজ্য রাজনীতিতে এই পোস্টার ঘিরে শুরু হয়েছে চর্চা।

Advertisements
Advertisement

তৃণমূল বিষয়টিকে অত্যন্ত অর্থহীন বলে উড়িয়ে দিলেও, এটি শাসকের মুখবদলের সূচনা বলেই মনে করছে বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস। প্রত্যেকটি বিরোধী দলই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলছেন, এবার মমতার জমানা শেষ, অভিষেক হবে অভিষেকের। অন্যদিকে আবার, একই সাথে তৃণমূল এবং বিজেপিকে নিশানা করেছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। মহারাষ্ট্রের প্রসঙ্গ তুলে ধরে, সিপিএম এবং কংগ্রেসের যৌথ প্রশ্নচিহ্ন, মহারাষ্ট্রের মত কি এই রাজ্যেও শাসক দলে ভাঙ্গন ধরানোর জন্য বিজেপি কষতে শুরু করেছে শিন্ডে ছক?

Advertisements

তবে বিষয়টা হলো মাসখানেক আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই আলিপুরদুয়ারের একটি দলীয় সমাবেশে, ‘ছয় মাসের মধ্যে নতুন তৃণমূল’ নিয়ে আসার কথা ঘোষণা করেছিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়ে এই ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনো পার্থ কান্ড এবং অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতার কোন কিছুই সামনে আসেনি। ফলে অভিষেকের এই ঘোষণাকে সেই সময় দলের ভিতরে সংস্কারের উদ্যোগ হিসেবে দেখা হয়েছিল। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরবর্তীতে যেদিকে গড়ালো, তাতে মন্ত্রিসভায় এবং দলে রদবদলের প্রক্রিয়া অনিবার্য হয়ে উঠলো। আর সেই রদবদলের সময় নতুন মুখদের মধ্যে উঠে এলেন অভিষেক ঘনিষ্ঠরা।

Advertisements
Advertisement

এই বিষয়টা দেখেই ভুরু কুচকাতে শুরু করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রাক স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যেই অনুব্রত মন্ডলের পক্ষ নিয়ে তাকে গ্রেফতার করার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে নিজের দলকে পথে নামার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার খেলা হবে দিবস থেকে এই একই কর্মসূচি শুরু হয়। এই দিনেও কলকাতা শহর রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল কর্মীরা মিছিল এবং প্রতিবাদ সভা করেন।

কিন্তু তার আগেই মমতার খাস্তা লোক দক্ষিণ কলকাতায় অভিষেকের আঙুল তোলা ছবি দিয়ে নতুন তৃণমূলের ঘোষণা সম্মানিত হোর্ডিং সমগ্র পরিস্থিতিতে নতুন তাৎপর্য যোগ করেছে। এর আগে ২০১৬ সালেও একবার মমতার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভার শপথের দিনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর ছবিসহ ম্যাচ উইনার লেখা প্ল্যাকার্ড ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ জায়গায়। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল রেড রোডের ওই শপথ অনুষ্ঠানে অভিষেকের অনুপস্থিতি। পরে ওই সমস্ত প্লেকার্ড খুব দ্রুত খুলে ফেলা হলেও, মঙ্গলবারের এই সমস্ত হোর্ডিং কিন্তু এখনো খোলেনি। তাহলে সত্যিই কি তৃণমূলে ভাঙ্গন ধরছে? অভিষেক নিজেই তৈরি করতে চলেছেন নতুন তৃণমূল? নাকি মমতাই এখনো থাকবেন সর্বময় কর্তৃ? উত্তর দেবে সময়।

Related Articles

Back to top button